প্রকাশিত: ২৭/১২/২০১৬ ৮:০২ এএম

বিশেষ প্রতিবেদক::
প্রতিবছর ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে লাখো পর্যটকের ভিড় জমে কক্সবাজারে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। বিদ্যালয় ছুটি থাকায় কেউ যান পরিবার নিয়ে ঘুরে বেড়াতে, কেউবা বন্ধু ও স্বজনদের নিয়ে বর্ষবরণ ও বিদায় উৎসব পালন করতে। সোমবার কক্সবাজার সৈকতে সমবেত হন প্রায় ২ লাখ পর্যটক। হোটেল-মোটেলের মালিক সমিতির নেতারা বলছেন, ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত শহরের ৪৫০টির বেশি হোটেল, মোটেল ও কটেজের প্রায় সব কক্ষ আগাম ভাড়া হয়ে গেছে।

পর্যটকদের নিরাপত্তার পাশাপাশি হয়রানি রোধে একাধিক ভ্রাম্যমাণ আদালত মাঠে রয়েছেন বলে জানান কক্সবাজারেরর জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন। তিনি বলেন, হোটেল-মোটেলে কোনো পর্যটকের কাছ থেকে অতিরিক্ত কক্ষ ভাড়া আদায়ের প্রমাণ পেলে হোটেল মালিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী বলেন, ‘২২ ডিসেম্বর থেকে পর্যটকের আগমন শুরু হয়েছে। বর্ষবরণ ও বিদায় উৎসবে যোগ দিতে অন্তত ১০ লাখ পর্যটকের সমাগম ঘটবে। বছরের শেষ ১০ দিনে কক্সবাজারে শত কোটি টাকার ব্যবসা হবে বলে আমাদের আশা রয়েছে।’

পর্যটকদের জন্য ৩০ ডিসেম্বর থেকে আগামী ১ জানুয়ারি পর্যন্ত সৈকতের লাবণী পয়েন্টে চলবে তিন দিনব্যাপী ‘বিচ কার্নিভাল’। বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন এই কার্নিভালের আয়োজক। কার্নিভালে বৈচিত্র্যময় সাংস্কৃতিক উৎসবের পাশাপাশি ফুড ফেস্টিভাল, ট্যুরিজম ফায়ার, কিডস এন্টারটেইনমেন্ট, লেজারশো, ফায়ারওয়ার্ক, ফানুস ও ঘুড়ি ওড়ানো উৎসব থাকবে।

সৈকতে গোসলে নেমে নিখোঁজ হওয়া পর্যটকদের উদ্ধার তৎপরতায় নিয়োজিত বেসরকারি সংস্থা ‘ইয়াছির লাইফ গার্ড স্টেশনের’ পরিচালক মোস্তফা কামাল বলেন, বছরের এই শেষ দিনগুলোতে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার সৈকতে প্রতিদিন কয়েক লাখ পর্যটকের সমাগম ঘটে। বিপুলসংখ্যক পর্যটককে সামাল দিতে ২০ জন উদ্ধারকর্মীকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই চাপ লেগে থাকবে। তবে এখন পর্যন্ত কেউ সাগরে স্রোতে ভেসে যায়নি।

দ্য কক্স টু ডে, সি গাল, প্রসাদ প্যারাডাইস, ওশ্যান প্যারাডাইস, সায়মান বিচ রিসোর্ট, লং বিচ, সি প্যালেসসহ সৈকত তীরের ১৬টি হোটেলের সংগঠন কক্সবাজার হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি মো. শাখাওয়াত হোসেন বলেন, গত রোববার ১৬টি হোটেলে রাত যাপন করেন প্রায় ৬ হাজার পর্যটক। কক্ষ না পেয়ে বহু পর্যটক ফিরে গেছেন। ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এসব হোটেলের সব কটি কক্ষ ভাড়া হয়ে গেছে।
সৈকতের আশপাশের ২২০টি কটেজ নিয়ে ‘কক্সবাজার কটেজ ব্যবসায়ী সমিতি’। এই সমিতির সভাপতি কাজী রাসেল আহম্মেদ বলেন, ১ জানুয়ারি পর্যন্ত কোনো কটেজ খালি নেই। গতকাল কটেজগুলোতে থেকেছেন প্রায় ১২ হাজার পর্যটক।

হোটেল মোটেল গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সভাপতি ওমর সুলতান বলেন, শহরের ৪৫৩টি হোটেল-মোটেল কটেজে দৈনিক থাকতে পারেন ৯৭ হাজারের মতো পর্যটক। এর অতিরিক্ত হলে হোটেলে গাদাগাদি করে রাখতে হয়।

গত দুই দিনে প্রায় ৩ লাখ পর্যটক কক্সবাজার ভ্রমণে এসেছেন বলে জানায় ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজারের সহকারী পুলিশ সুপার রায়হান কাজেমী। তিনি বলেন, বিপুলসংখ্যক পর্যটক সামাল দিতে ১২৩ জন ট্যুরিস্ট পুলিশ নিয়োজিত আছে। সৈকতে ভিড়ের মধ্যে হারিয়ে যাওয়া ১৬ জন শিশুকে উদ্ধার করে স্বজনদের হাতে ফিরিয়ে দিয়েছেন ট্যুরিস্ট পুলিশ সদস্যরা।

পাঠকের মতামত

সময়ের আলো’র নাইক্ষ‌্যংছড়ি প্রতিনিধি হিসাবে নিয়োগ পেলেন সাংবাদিক নুর মোহাম্মদ

দেশের শীর্ষ স্থানীয় জাতীয় দৈনিক সময়ের আলো পত্রিকায় নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে চুড়ান্ত নিয়োগ পেলেন ...